তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি রচনা Information and communication technology Composition

0
1895
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি রচনা
আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করতে নিচের বাটন এ ক্লিক করুন ....

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি রচনা Information and communication technology Composition. আপনাদের সুবিধার্থে সহজ-সরল ভাষায় এবং খুব সুন্দর ভাবে গুগলের বিভিন্ন অংশ হতে সংগ্রহ করে আপনাদের মাঝে উপস্থাপন করা হলো

রচনা : আধুনিক তথ্য প্রযুক্তি ও বাংলাদেশ

অথবা, রচনা : তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি

ভূমিকা : বর্তমান বিশ্বের সবচেয়ে আলোচিত ও গুরুত্বপূর্ণ বিষয় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি। শিল্প বিপ্লবের পর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির উন্নয়ন পৃথিবীতে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য ঘটনা। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ক্ষেত্রে নজিরবিহীন উন্নতির ফলে গোটা বিশ্ব আজ গ্লোবাল ভিলেজে পরিণত হয়েছে। তথ্যপ্রযুক্তি দূরকে এনেছে চোখের সামনে, পরকে করেছে আপন, আর অসাধ্যকে সাধন করেছে।

তথ্যপ্রযুক্তি বর্তমান বিশ্বের সকল প্রকার উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের মূল হাতিয়ার। যে জাতি তথ্যপ্রযুক্তিতে যত বেশি দক্ষ, তাদের সার্বিক অবস্থাও তত বেশি উন্নত। একবিংশ শতাব্দীর চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় প্রস্তুত হতে এবং জ্ঞান, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে বিশ্ব পরিমণ্ডলে নিজ অবস্থান সুদৃঢ় ও উজ্জ্বল করতে হলে তথ্যপ্রযুক্তির কোনো বিকল্প নেই। কারণ একবিংশ শতাব্দীর সম্ভাবনা ও চ্যালেঞ্জ দুইই আবর্তিত হচ্ছে তথ্যপ্রযুক্তিকে ঘিরে।

আধুনিক প্রযুক্তির সূচনাকাল: বর্তমান প্রযুক্তির জন্মলগ্ন বলে ধরা হয় উনবিংশ শতাব্দীর শুরুর দিকের শিল্প বিপ্লবের সময়কে। এই সময় থেকেই জীবনের প্রায় সর্বক্ষেত্রে প্রযুক্তির প্রয়োগ ব্যাপকহারে শুরু হয়। তবে ই সময়ে পৃথিবীর জনসংখ্যা এবং জীবনযাত্রাগত জটিলতা কম থাকার কারনে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির গুরুত্ব তেমনভাবে মানুষের কাছে বোধগম্য হয়নি। কিন্তু সময় যত এগিয়েছে ততই তথ্য ও প্রযুক্তির গুরুত্ব সম্পর্কে মানুষ বুঝতে শুরু করেছে ।

মোটামুটি বিংশ শতাব্দীর শুরু থেকেই পৃথিবী জুড়ে তথ্য এবং যোগাযোগ প্রযুক্তির অভাবজনিত প্রয়োজনীয়তা বিশেষভাবে পরিলক্ষিত হতে থাকে। প্রকৃতির স্বাভাবিক নিয়মে প্রয়োজনের সাথে তাল মিলিয়ে চলার জন্য ধিরে ধিরে বর্তমানের আধুনিক প্রযুক্তির জন্ম হয়।

তথ্যপ্রযুক্তি কি? : তথ্য সংরক্ষণ, প্রক্রিয়াকরণ, ব্যবস্থাপনা এবং বিতরণের জন্য ব্যবহৃত প্রক্রিয়া ও পদ্ধতির সমন্বয়কে তথ্যপ্রযুক্তি বলা হয়। কম্পিউটিং, মাইক্রো ইলেকট্রনিক্স, টেলিকমিউনিকেশন ইত্যাদি বিষয় তথ্যপ্রযুক্তির সাথে ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত।

ইতিহাসের পাতায় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি: ইতিহাসে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির অভাবজনিত প্রয়োজনীয়তা প্রথম অনুভূত হয় বিংশ শতাব্দীর প্রথম ভাগে সম্ভবত প্রথম বিশ্বযুদ্ধের প্রাক্কালে। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের অবসানের পর থেকেই পৃথিবীর আন্তর্জাতিক আর্থসামাজিক চেহারা দ্রুত বদলে যেতে থাকে। বিশ্বজুড়ে বৈজ্ঞানিক গবেষণার ঢল নেমে যায় নতুন আবিষ্কারের মাধ্যমে নিজের দেশকে শক্তিশালী করার উদ্দেশ্যে।

তারপর বিংশ শতকের মধ্যভাগে বিশ্বজুড়ে আরো একবার দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের দামামা বেজে যায়। পৃথিবীর ইতিহাসে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধেই সর্বপ্রথম তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির সামান্যতম ব্যবহার হয়েছিল। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শেষ হলে পৃথিবীর পটচিত্র আরো তাড়াতাড়ি বদলে যেতে থাকে। পৃথিবীর দুই মহাশক্তির মধ্যে ঠান্ডা যুদ্ধের আবহে বিশ্বজুড়ে বৈজ্ঞানিক অগ্রগতির ক্ষেত্রেও নোংরা প্রতিযোগিতা শুরু হয়।

এর ব্যাপক প্রভাব পড়ে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ক্ষেত্রেও। এরপর সত্তরের দশকে পৃথিবীতে ইন্টারনেট এর আগমন ঘটলে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিগত ক্ষেত্রে একপ্রকার বিপ্লব ঘটে যায়। সেই সময় থেকে অতি দ্রুত পৃথিবীতে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির চরিত্র বিবর্তিত হতে থাকে।

দৈনন্দিন জীবনে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যবহার

তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার যে জীবনযাত্রার মান বদলে দিতে পারে তা বিশ্বাস করতে এখন আর কেউ ভুল করছে না। তাই তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার বাংলাদেশে এখন অনেক বেড়েছে। স্কুল থেকে শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত কম্পিউটার শিক্ষা কার্যক্রম প্রবর্তন করা হয়েছে।

প্রতিনিয়ত কম্পিউটারের ব্যবহার বাড়ছে। দেশে এখন কম্পিউটার হার্ডওয়্যার, সফ্টওয়্যার, ইন্টারনেট ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ৭ থেকে ৮ হাজারের মতো। সারা দেশে কম্পিউটার হার্ডওয়্যারের শো-রুম রয়েছে সহস্রাধিক। ঢাকাতেই গড়ে উঠেছে ৫ শতাধিক হার্ডওয়্যার প্রতিষ্ঠান। সফ্টওয়্যার প্রতিষ্ঠানের সংখ্যাও শতাধিক।

  • কম্পিউটার বা মোবাইলের মাধ্যমে ঘরে বসেই বিভিন্ন পরীক্ষার রেজাল্ট জেনে নেয়া যায়।
  • মোবাইল ফোন ব্যবহার করে টাকা পাঠানো, গ্রহণ, মোবাইল রিচার্জ, বিদ্যূত বিল পরিশোধ, পানির বিল পরিশোধ ইত্যাদি করা যায়।
  • ইন্টারনেট ব্যবহার করে ঘরে বসেই বেশিরভাগ চাকরির আবেদন করা যায় এবং পরীক্ষার প্রবেশপত্র অনলাইন থেকে ডাউনলোড করে প্রিন্ট করা যায়।
  • অনলাইন টিকেটিং সিস্টেম ব্যাবহার করে বাস টার্মিনাল বা রেল স্টেশনে না গিয়েই বাস, ট্রেন বা প্লেনের টিকিট ক্রয় করা যায়।
  • ইন্টারনেটের সহায়তায় প্রায় সব ধরনের দৈনিক পত্রিকা (যেমনঃ প্রথম আলোসমকালবিডি-নিউজ২৪৭) পড়া যায়।
  • ইন্টারনেটের মাধ্যমে ঘরে বসেই নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য থেকে শুরু করে রান্না করা খাবার পর্যন্ত অর্ডার করা যায়।
  • যে কোন ধরণের ই-বুক পড়ার সুবিধা পাওয়া যায়।
  • ইন্টারনেটের কল্যাণে আজ ঘরে বসেই দেশে বা বিদেশের খ্যাতনামা ডক্টরদের থেকে পরামর্শ গ্রহন করা যায়
  • কৃষি উৎপাদনের জন্য প্রয়োজনীয় বিভিন্ন তথ্য ঘরে বসেই জেনে নেওয়া যায়।
  • ইউটিউব এবং আরও কিছু ওয়েবসাইটের কল্যাণে ঘরে বসেই বিভিন্ন বিনোদনমূলক অনুষ্ঠান (যেমনঃ সিনেমা, নাটক ইত্যাদি) উপভোগ করা যায়

চিকিৎসা ও শিক্ষা ক্ষেত্রে তথ্য ও যোগাযোগ তথ্যপ্রযুক্তির ভূমিকা : তথ্য প্রযুক্তির আরও একটি বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ শাখা বিস্তার লাভ করেছে চিকিৎসাক্ষেত্রে । তথ্য প্রযুক্তিকে ব্যাবহার করে অনেক রকম নিত্য নতুন আবিষ্কার বর্তমান চিকিৎসা ব্যবস্থায় আমূল পরিবরতন নিয়ে এসেছে। এ প্রসঙ্গে উদাহরণ হিসেবে সর্বপ্রথম উল্লেখ করতে হয় রোবোটিক্স এবং আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সংক্রান্ত আবিষ্কার ও চিকিৎসা ক্ষেত্রে এইগুলোর ব্যাবহার।

এগুলো প্রয়োগ করার মাধ্যমে বিভিন্ন জটিল রোগ নির্ধারণ ও সেই রোগের সমাধান খুব সহজে, দ্রুতগতিতে এবং নির্ভুল ভাবে সম্পাদন করা সম্ভব হচ্ছে। এছাড়া তথ্য প্রযুক্তিকে ব্যাবহার করে নিত্য নতুন আবিষ্কারগুলো বর্তমান শিক্ষাব্যাবস্তাকেও বিশেষভাবে প্রভাবিত করে। শিক্ষাক্ষেত্রে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স এর প্রয়োগ করার ফলে বর্তমান শিক্ষাকে অনেক বেশি বাস্তবমুখী এবং যথাযথ করে তোলা সম্ভব হয়েছে।

অর্থনৈতিক উন্নয়নে তথ্যপ্রযুক্তির ভূমিকা : তথ্যপ্রযুক্তিকে মূলধন হিসেবে ব্যবহার করে এবং মেধা ও শ্রমকে কাজে লাগিয়ে সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, তাইওয়ান, ভারত, থাইল্যান্ড প্রভৃতি দেশ অনেক এগিয়ে গেছে। অথচ আমাদের নির্বুদ্ধিতার কারণে আজ আমরা তথ্যের সুপার হাইওয়ের সাথে যুক্ত হতে পারছি না। আবার সরকারের অনীহার কারণে ফাইবার অপটিকস ব্যবহারের সুযোগ থেকে বঞ্চিত হয়েছি আমরা।

তাই আমাদের প্রচুর টাকা খরচ করে ব্যবহার করতে হচ্ছে ভি স্যাটের লাইন। তবে নানা প্রতিকূলতা সত্ত্বেও তথ্যপ্রযুক্তি খাত বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে বিভিন্নভাবে অবদান রাখছে। দেশে কম্পিউটার সফ্টওয়্যার তৈরি বেশ বেড়েছে। দৈনিক পত্রিকার তথ্য অনুযায়ী, ২০১৭-১৮ অর্থবছরে সরকারি হিসাবে ৮০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের সফ্টওয়্যার রপ্তানি করেছে বাংলাদেশ।

কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে তথ্যপ্রযুক্তির ভূমিকা : বাংলাদেশে বর্তমানে কম্পিউটার হার্ডওয়্যার, সফ্টওয়্যার, ইন্টারনেট ও তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক প্রশিক্ষণ প্রদানের জন্য ৭-৮ হাজার প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। এ সকল প্রতিষ্ঠানে বিপুল সংখ্যক বেকার যুবক-যুবতীর কর্মসংস্থান হচ্ছে। তারা সহজেই ভালো উপার্জন করতে পারছে।

গবেষণা ক্ষেত্রে তথ্যপ্রযুক্তির ভূমিকা : আধুনিক যুগের জ্ঞান-বিজ্ঞান চর্চা, বিশেষ করে বিভিন্ন ধরণের গবেষণা সংক্রান্ত ব্যাপারে তথ্য প্রযুক্তির ব্যাপক ব্যাবহার, গবেষণার পুড়নো নিয়ম ও সমীকরণগুলিকে অতি দ্রুত পরিবর্তন করে দিচ্ছে। তথ্য প্রযুক্তির অকল্পনীয় উন্নতির ফলে জ্ঞান আহরনের জন্য এখন আর মাথার ঘাম পায়ে ফেলার প্রয়োজন হয় না। তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় ঘরে বসেই বিভিন্ন ধরণের বিশ্বমানের গবেষণাপত্র পড়ে ফেলা সম্ভব।

এছাড়াও গবেষণা সংক্রান্ত নানারকম বিষয় যেমন: আবহাওয়ার গতিবিধি নির্ণয়, জলবায়ুর চরিত্র নির্ণয়, ভূ-প্রাকৃতিক বিষয়ে গবেষণা, জরিপ সংক্রান্ত গবেষণা ইত্যাদি কাজে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি ব্যাবহারের ফলে অত্যন্ত নির্ভুল ও সহজ ভাবে নির্ধারণ করা সম্ভব হয়। সভ্যতার উন্নতির পূর্বশর্তই হলো উন্নত মানের গবেষণা। তাই বর্তমান গবেষণার পদ্ধতিতে বৈপ্লবিক পরিবর্তন সাধনের মাধ্যমে সহজ করে তুলে তথ্যপ্রযুক্তি আসলে পৃথিবীর উন্নতির ক্ষেত্রেই সহায়তা করছে।

বিনোদনের ক্ষেত্রে তথ্যপ্রযুক্তির ভূমিকা : বিনোদন জগতের ক্ষেত্রেও বর্তমান যুগে তথ্য ও প্রযুক্তির ব্যাপক ও বহুমুখী প্রভাব লক্ষ করা যায় । বর্তমান সময়ে বিনোদনের জন্য মানুষকে ঘরের বাহিরে যাওয়ার প্রয়োজন পড়ে না। ইন্টারনেট ও তথ্যপ্রযুক্তির কল্যাণে ঘরে বসেই বিভিন্ন ধরণের বিশ্বমানের বিনোদনের আনন্দ উপভোগ করা সম্ভব হচ্ছে।

মোবাইল, কম্পিউটার, টেলিভিশন সকল ক্ষেত্রেই তথ্যপ্রযুক্তির ব্যাপক ব্যবহার হওয়ার ফলে মানুষের কাছে বিনোদন আগের তুলনায় অনেক বেশি সহজলভ্য ও উপভোগ্য হয়ে উঠছে । তাছাড়া বিনোদনের ক্ষেত্রে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সের প্রয়োগের ফলে বিনোদন জগতে এক নতুন মাত্রা যোগ হয়েছে ।

তথ্যপ্রযুক্তির উন্নয়নের জন্য করণীয় :

বর্তমান একবিংশ শতাব্দীর প্রতিযোগিতামূলক বিশ্বে বাংলাদেশকে টিকে থাকতে হলে তথ্যপ্রযুক্তির উন্নয়নের বিকল্প নেই। আমাদের দেশের শিক্ষিত তরুণ সম্প্রদায় তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় তাদের যোগ্যতা বারবারই প্রমাণ করেছে। তাই আমাদের তরুণদের মেধা, সৃজনশীলতা ও উদ্ভাবনী শক্তিকে একবিংশ শতাব্দীর চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার জন্য কার্যকরী করে তুলতে হবে। এজন্য নিম্নলিখিত পদক্ষেপসমূহ গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করা দরকার।

জাতীয় তথ্য অবকাঠামো গঠন : জাতীয় তথ্য অবকাঠামো গড়ে তোলা ব্যতীত বিশ্বব্যাপী তথ্যপ্রযুক্তি বিপ্লবের অংশীদার হওয়া সম্ভব নয়, যে রকম সংযোগ সড়ক ছাড়া মহাসড়কে পৌঁছানো সম্ভব নয়। তথ্য অবকাঠামো ব্যতীত গ্রামীণ বাংলাদেশ তথ্য বৈষম্যের শিকার হবে, যা বাজার অর্থনীতি, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে সুবিধালাভের সম্ভাবনাকে সংকুচিত করে ফেলবে। ফলে বাংলাদেশ তথ্যপ্রযুক্তিভিত্তিক নতুন অর্থনীতির অংশীদার হওয়ার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হবে।

টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন : টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা তথ্য অবকাঠামোর মেরুদণ্ড। শক্তিশালী ও সুবিস্তৃত টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা ব্যতীত তথ্যপ্রযুক্তির উন্নয়ন একেবারেই অসম্ভব। অথচ এ দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণের টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থায় প্রবেশের কোনো সুযোগ নেই। টেলিনেটওয়ার্ক সম্প্রসারণে বার্ষিক লক্ষ্য নির্ধারণ ও তার বাস্তবায়ন নিশ্চিত করা।

মানবসম্পদ উন্নয়ন : দক্ষ মানবসম্পদ উন্নয়ন ছাড়া কোনো অবস্থাতেই দারিদ্র্য দূরীকরণ এবং তথ্যপ্রযুক্তির বিকাশ সাধন সম্ভব নয়। তাই মানবসম্পদ উন্নয়নের জন্য।
ইংরেজি শিক্ষাকে প্রযুক্তি শিক্ষা হিসেবে গুরুত্ব দেয়া।
বাস্তবভিত্তিক যোগ্যতা অর্জনের জন্য তথ্যপ্রযুক্তি শিল্প ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে সম্পর্কোন্নয়নের ব্যবস্থা করাতে হবে।

তথ্যপ্রযুক্তিভিত্তিক শিল্প, ব্যবসা-বাণিজ্য ও অর্থনীতি চালু করা : বিশ্বব্যাপী তথ্যপ্রযুক্তির ব্যাপক প্রসারের যুগে জীবনযাত্রার সকল ক্ষেত্রে তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহারের প্রতি আমরা কত দ্রুত সাড়া দেব তার ওপর নির্ভর করছে আগামী দিনের বাংলাদেশের ভাগ্য। তাই আমাদের উচিত অতি দ্রুত তথ্যপ্রযুক্তিভিত্তিক শিল্প, ব্যবসা-বাণিজ্য, ব্যাংকিং ও অর্থনীতি চালু করা।

তথ্যপ্রযুক্তিভিত্তিক ব্যাংকিং ব্যবস্থা চালুকরণ : সুদক্ষ ব্যাংকিং ব্যবস্থা দেশের অর্থনীতির প্রাণশক্তি। আর এই ব্যাংকিং খাতকে দক্ষ, যুগোপযোগী ও আধুনিক করার জন্য তথ্যপ্রযুক্তিভিত্তিক ব্যাংকিং ব্যবস্থা চালুকরণের কোনো বিকল্প নেই।

উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিই বর্তমান বিশ্বে সকল প্রকার উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের মূল হাতিয়ার। যে জাতি তথ্যপ্রযুক্তিতে যত বেশি দক্ষ, তাদের সার্বিক অবস্থাও তত বেশি উন্নত। তাই তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে দারিদ্র্য দূরীকরণ, অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও যুবদের বেকারত্ব দূর করার জন্য আমাদেরকে স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করতে হবে। দেশে তথ্যপ্রযুক্তির বিপ্লব ঘটানোর জন্য সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালাতে হবে। সরকার, বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও সর্বস্তরের জনগণের ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টার মাধ্যমে অচিরেই বাংলাদেশ তথ্যপ্রযুক্তির ক্ষেত্রে বিপ্লব ঘটিয়ে ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত হয়ে জ্ঞান-বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে বিশ্ব পরিমণ্ডলে নিজ অবস্থান সুদৃঢ় ও উজ্জ্বল করতে সক্ষম হবে – এটাই আমাদের একমাত্র প্রত্যাশা।

আপনার পছন্দের সকল নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেখুন

আপনি এখান থেকে আপনার পছন্দ অনুসারে আপনার বিভাগের অর্থাৎ সরকারি , বেসরকারি , ব্যাংক অথবা নতুন সকল ধরনের চাকরির খবর এখান থেকে দেখতে পারবেন।

 সকল নামের অর্থ দেখুন – এখানে ক্লিক করুন।

 সরকারি চাকরির সকল নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেখুনএখানে ক্লিক করুন।

বেসরকারি/কোম্পানি চাকরির সকল নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেখুনএখানে ক্লিক করুন।

ব্যাংকের চাকরির সকল নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেখুনএখানে ক্লিক করুন।

প্রতিদিনের নতুন চাকরির সকল নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেখুনএখানে ক্লিক করুন।

Join My Facebook Group 

আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করতে নিচের বাটন এ ক্লিক করুন ....

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here